16/05/2025 : Friday
Trip No.: - 27আজকের tour-এর প্রধান গন্তব্য হল জাফর খান গাজীর দরগা। Google map-এ যখন এই জায়গা টা নিয়ে study করছিলাম পাশাপাশি আরো দুটি ভালো জায়গার সন্ধান পাই - কুন্তী নদীর উপর কাঠের ঝুলন্ত সেতু আর গোপালপুর DVC lockgate. তারপর ওই ৩টি জায়গা নিয়ে আজকের tour plan টা সাজিয়ে নিই।
আজ ভোর ৫ টায় ঘর থেকে বেরোলাম। বর্ধমান থেকে শক্তিগড় পেরোনোর পর রাস্তার ধারে একবার দাঁড়ালাম। ফ্লাস্কে করে করে আনা চা ও বিস্কুট খেয়ে শরীরকে একটু সতেজ করে নিলাম। তারপর ওখান থেকে রসুলপুর-মেমারী-পাণ্ডুয়া হয়ে মগরা পৌঁছালাম।
মগরা থেকে কুন্তিঘাট-মগরা রোড ধরলাম। তারপর কিছুদূর গিয়ে Google map দেখে কুন্তিঘাট স্টেশন রোড ধরে এগোতে থাকলাম। কুন্তিঘাট স্টেশনের পাশ দিয়ে Google map দেখে দেখে সকাল ৭:৩০-এর কিছু আগে পৌঁছে গেলাম আজকের প্রথম গন্তব্য - কুন্তিঘাট ঝুলন্ত কাঠের সেতু। রাস্তায় আসার সময় চোখে পড়ছিল কৃষ্ণচূড়া গাছগুলি ফুলে ভর্তি, গাছগুলির রক্তিম আবরণ দেখে মন ভরে যাচ্ছিল।
1. Kuntighat Wooden Hanging Bridge (কুন্তিঘাট ঝুলন্ত কাঠের সেতু)
কুন্তিঘাট হল কুন্তি নদীর তীরে অবস্থিত একটি স্থান। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকে তৈরী হয় কুন্তী নদীর উপর এই ঝুলন্ত কাঠের ব্রিজটি। এইটি মূলত একটি suspension bridge যেখানে ব্রিজের মূল কাঠামো লোহার দন্ড দিয়ে তৈরী। তার উপর কাঠের পাটা বসিয়ে তৈরী হয়েছে রাস্তা।
ব্রিজের কিছু আগে গাড়ি রেখে ব্রিজের দিকে এগিয়ে গেলাম। সময় সকাল ৭:২০। সকালের মিঠে রোদে ব্রিজের উপর হাঁটতে বেশ ভালো লাগছিল। এই ব্রিজ থেকে একদিকে গঙ্গা ও কুন্তী নদীর সঙ্গমস্থল এবং অন্যদিকে রেল সেতু সহজেই দেখা যায়। এই ব্রিজের উপর দিয়ে কেবল ছোট যানবাহন চলাচল করে।

এই ব্রিজের পাশেই একটি প্রাচীন ব্রিজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পেলাম। কথিত আছে এই প্রাচীন সেতুটি নবাব সিরাজউদ্দৌলার আমলে তৈরী।
বর্তমানে ফটোগ্রাফারদের মধ্যে এই ব্রিজটি খুব জনপ্রিয় একটি জায়গা। এই ঝুলন্ত ব্রিজে ৩০ মিনিট ঘোরাঘুরি করে এবার চললাম আজকের পরবর্তী গন্তব্য Gopalpur DVC lockgate.
2. Gopalpur DVC Lockgate
এই জায়গাটি কুন্তিঘাট কাঠের সেতু থেকে ৫ কিমির মধ্যে। কুন্তিঘাট থেকে বেরিয়ে কুন্তিঘাট-মগরা রোড ধরে কিছুদূর যাওয়ার পর Google map দেখে গোপালপুরের দিকে এগিয়ে চললাম। অবশেষে সকাল ৮:১৫ তে এসে পৌছালাম গোপালপুরের DVC Lockgate-এ।
চারপাশে গাছগাছালি, সবুজ বিস্তৃত মাঠ, নদীর জলের শব্দ তার সাথে পাখির ডাকে প্রাণবন্ত এই জায়গা টি প্রকৃতির মাঝে কিছুক্ষন সময় কাটানোর জন্য সত্যিই এক অনবদ্য জায়গা। জায়গা টি খুবই নির্জন, পাখির ডাক আর জলের শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই চারপাশে। ১৯৫৮ সালে DVC কর্তৃক কুন্তী নদীর উপর এই বাঁধটি নির্মাণ করা হয় কৃষিকাজের জন্য। শীতকালে পিকনিকের জন্য এটি খুব ভালো জায়গা।
চারিদিক ঘুরে গাড়ির কাছে এসে কেক, বিস্কুট অল্প করে খেয়ে নিলাম। তারপর কানে earphone লাগিয়ে আবার লকগেটের পাশে গিয়ে বসলাম। প্রভাতী গানের সাথে নির্জন প্রকৃতির শোভা উপভোগ করছিলাম। কত তাড়াতাড়ি যেন সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯ টা বেজে গেছে। এবার তো উঠতে হবে। এখন এখান থেকে যাব আজকের প্রধান গন্তব্য জাফর খান গাজীর দরগা।
3. Dargah of Zafar Khan Ghazi (Zafar Khan Ghazi Mosque and Dargah)
Gopalpur DVC থেকে জাফর খান গাজীর দরগা ১১ কিমি দূরে। Gopalpur DVC থেকে বেরিয়ে রাজারামবাটি হয়ে G.T. Road ধরলাম। নিমতলা মোড় এসে সেখান থেকে Google map দেখে ত্রিবেণী ঘাট রোড ধরলাম। অবশেষে সকাল ৯:৪৫-এ এসে পৌঁছালাম ত্রিবেনীতে হুগলী নদীর তীরে আজকের প্রধান গন্তব্যে।
গঙ্গা, কুন্তী এবং সরস্বতী নদীর মিলনস্থল এই ত্রিবেণী হিন্দুদের কাছে একটি পবিত্র স্থান হলেও বাংলায় মুসলিম শাসন শুরু হয়েছিল এই ত্রিবেণী থেকেই।

জাফর আলী খান ছিলেন দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহের প্রতাপশালী সেনাপতি। তিনি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে হুগলির হিন্দু রাজাকে (রাজা ভূদেব) পরাজিত করে এই অঞ্চলে মুসলিম শাসনের সূচনা করেন। পরবর্তীতে জাফর আলী খানের এই স্থানের প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে দিল্লীতে ফিরে না গিয়ে এখানেই থেকে যান। তিনি ত্রিবেনীতে ১২৯৮ সালে একটি মসজিদ এবং দরগা নির্মাণ করেন যা বর্তমানে জাফর খান গাজী মসজিদ এবং দরগা নাম পরিচিত এবং ASI দ্বারা সংরক্ষিত।
জানা যায়, জাফর খান গাজীর দরগা যেখানে আছে হিন্দু শাসনকালে এখানে ছিল একটি বিষ্ণুমন্দির, যার প্রবেশপথটি নদীর দিকে মুখ করে ছিল। পরবর্তীতে মুসলিম শাসকরা এটিকে দরগায় রূপান্তরিত করে এবং মন্দিরের উঁচু প্রবেশপথটি জালযুক্ত জানালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাই এই দরগার দেওয়ালে অনেক হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি খোদাই করা আছে যা আজও দেখতে পাওয়া যায়। কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থিত মসজিদ এবং দরগা উভয়ই ইট এবং ব্যাসল্ট পাথর দ্বারা নির্মিত।
শিলালিপি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, মসজিদটি আগে মাদ্রাসা হিসাবে ব্যবহৃত হত। মসজিদের উপর ১০ টি গম্বুজ ছিল যার অনেক গুলিই বর্তমানে বিনষ্ট।
জাফর খান গাজীর মৃত্যুর পর ১৩১৫ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত সমাধিটি পূর্ব ভারতের সবচেয়ে সুন্দর সমাধিসৌধ।
দরগা টি দুটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিম দিকের কক্ষে আছে জাফর খান গাজী এবং তাঁর দুই পুত্র আইন খান গাজী এবং ঘাইন খান গাজী এবং ছোটছেলে বারখান গাজীর স্ত্রীর (যিনি ধর্মে হিন্দু ছিলেন) সমাধি আছে। আর পূর্ব দিকের কক্ষে বারখান গাজী এবং তার দুই পুত্র রহিম খান এবং করিম খানের সমাধি আছে। এই দরগাটিও আগে মাদ্রাসা হিসাবে ব্যবহৃত হত।
বাইরে গাড়ি রেখে প্রথমেই দেখলাম এই দরগা ও মসজিদ তৈরির আগে যখন হিন্দু বিষ্ণু মন্দির ছিল তার প্রবেশপথ, যেটি মুসলিম শাসকরা দরগা নির্মাণ করার পর বন্ধ করে দেয়। সেই প্রবেশপথের চারপাশে বিভিন্ন হিন্দু দেবদেবীর মূর্তিও চোখে পড়ল। সেই প্রবেশপথের নিচে সিঁড়ি রয়েছে। সিঁড়ির উপর দেখলাম অনেকে ফুল দিয়ে গেছে।
এরপর ভিতরে প্রবেশ করলাম। ASI সংরক্ষিত এলাকা হওয়ায় ভিতর টি বেশ সাজানো গোছানো। ভিতরে প্রবেশ করে ডানদিকে দেখলাম দরগা। যেখানে ৮ টি সমাধি রয়েছে। আগেই বলেছি দরগা টি দুটি কক্ষে বিভক্ত।পশ্চিম দিকের কক্ষে আছে জাফর খান গাজী এবং তাঁর দুই পুত্র আইন খান গাজী এবং ঘাইন খান গাজী এবং ছোটছেলে বারখান গাজীর স্ত্রীর (যিনি ধর্মে হিন্দু ছিলেন) সমাধি আছে। আর পূর্ব দিকের কক্ষে বারখান গাজী এবং তার দুই পুত্র রহিম খান এবং করিম খানের সমাধি আছে এবং তার সাথে একজন অজ্ঞাত মহিলার সমাধি রয়েছে।
এছাড়াও আসে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ত্রয়োদশ শতকের আরো কিছু সমাধি রয়েছে।
দরগার দেওয়ালে দেখলাম কিছু কিছু জায়গায় রয়েছে টেরাকোটার কাজ, রয়েছে অনেক হিন্দু দেব দেবীর মূর্তি। কারণ এই দরগা মুসলিম শাসনের আগে বিষ্ণু মন্দির ছিল তা আগেই বলেছি।
দরগার সামনেই অর্থাৎ দক্ষিণ দিকে রয়েছে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো একটি প্রকান্ড বটগাছ। যা ছায়া প্রদান করার পাশাপাশি কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।
সামনের রাস্তা দিয়ে কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেলাম মসজিদ টি। ১২৯৮ সালে নির্মিত এই জাফর খান গাজী মসজিদটিকে বাংলার সর্বপ্রথম তথা প্রাচীনতম মসজিদ বলা হয়। পূর্বে ১০ টি গম্বুজ থাকলেও বর্তমানে অনেক গুলিই বিনষ্ট। মসজিদের ভিতরে কয়েকজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষকে দেখতে পেলাম। মসজিদে পৌঁছে কিছু ছবি তুললাম। মসজিদের ভিতর অসাধারণ এক শান্ত পরিবেশ, যা মন কে ভালো করে দেয়।
মসজিদের চারপাশ ঘোরার পর মসজিদ থেকে বেরিয়ে দরগার দিকে এগিয়ে চললাম। আবার একবার দরগার ভিতরে যাবো।

দরগার ভিতর আবার প্রবেশ করলাম। আমার সাথে করে আনা ধূপ ও মোমবাতি সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিবেদন করলাম।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১১:৩০ বেজে গেছে। আজ শুক্রবার, আর কিছুক্ষন পর শুরু হবে জুম্মার নামাজ।
আজকের মতো ঘোরাঘুরি এখানেই শেষ। এবার ফিরতে হবে। ১১:৩০ -এ জাফর খান গাজীর দরগা চত্ত্বর থেকে বেরিয়ে পড়লাম। অতীতের উত্থান পতনের একরাশ স্মৃতি আগলে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল এক বিষ্ণুমন্দিরের ধ্বংসাবশেষ তথা জাফর খান গাজীর দরগা ও মসজিদ।
এর আগে বিভিন্ন হিন্দু মন্দির নিয়ে অনেকগুলো tour করেছি, তার গল্প আসা করি তোমরা এর আগে পড়েছো। আজ সম্পূর্ণ অন্য একটি ধর্মীয় স্থানে ঘুরে গেলাম। কিন্তু এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় স্থান নয়, আমাদের বাংলার তথা পশ্চিমবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সম্পদ, আজ এখানে এসে বাংলার ইতিহাসের অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারলাম যা এতদিন আমার কাছে অজানা ছিল। যাইহোক এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ একটি শান্ত জায়গা যেখানে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে আমার তো খুব ভালো লাগল। আমার এই লেখা পড়ে এবং ছবিগুলি দেখে হয়তো তোমাদের ও আসার ইচ্ছা হচ্ছে।
এখানে তোমরা দেখতে পেলে একটি প্রাচীন বিষ্ণুমন্দির যাকে মুসলিম শাসকরা বাংলা আক্রমণের পর ধ্বংস করে মসজিদ ও দরগা তে রূপান্তরিত করেছিলেন, যা বাংলার সর্বপ্রথম মসজিদ। এখানে এখনও বিষ্ণুমন্দিরের চিহ্ন সম্পূর্ণরূপে মুছে যায় নি, রয়েছে সেই মন্দিরের প্রবেশদ্বার, রয়েছে দেওয়ালের গায়ে টেরাকোটার দেবদেবীদের মূর্তি। তাই ভিতরে দরগা এবং মসজিদে মুসলিম আচার আচরণ পালিত হলেও, বাইরে সেই মন্দিরের প্রবেশদ্বারের সামনে আজও হিন্দুরা ফুল দিয়ে যায়।
ধর্মের পার্থক্য, মতামতের পার্থক্য, বিশ্বাসের পার্থক্য, ক্ষমতার জন্য লড়াই এসব কোনোদিন ও আমার ভালো লাগে না। এসব ভুলে গিয়ে এসো না আমরা একে অপরকে আলিঙ্গন করি, একে অপরকে সম্মান করতে শিখি, এবং একে ওপরের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান করতে শিখি। আমি মনে করি ঈশ্বর এক ও অভিন্ন; সব ধর্মের মূল অর্থ আসলে একই, আমরা এটা না বুঝে নিজেদের মধ্যে মিছামিছি বিভেদ সৃষ্টি করি। আমরা কি সত্যিই পারি না সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে নিজেদেরকে শুধুমাত্র একজন মানুষ হিসাবে পরিচয় দিতে? আমরা যারা ধর্মের প্রকৃত অর্থ না বুঝে, বা ভুল অর্থ বুঝে ভুল কাজকর্ম করে ফেলি, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যেন আমাদের ক্ষমা করেন।
মনে রাখবে ধর্মীয় ভক্তি কখনোই মানবতার বিরুদ্ধে হতে পারে না। মানবতাই হল সর্বোচ্চ ধর্ম।
আমি ত্রিবেণী থেকে বেরিয়ে মগরা-পাণ্ডুয়া হয়ে সিমলাগড় পৌঁছে একবার রাস্তার পাশে একটা গাছের নিচে দাঁড়ালাম। রোদের ভালোই তাপ। গরম এবার একটু একটু বাড়ছে।
খুব খিদে পেয়েছে। আমার সেই রসুলপুরের বন্ধু ভাস্কর কে ফোন করলাম। এর আগের অনেকগুলো story তে ভাস্করের কথা লিখেছিলাম আশা করি তোমরা পড়েছো। ঠিক হল আজ দুপুরে মেমারী তে আশীর্বাদ বিরিয়ানি তে lunch করা হবে। ঠিক হল আমরা একেবারে মেমারীতেই meet করব। ভাস্করের সাথে ভাস্করের বন্ধু বিশাল ও আসছে।
দুপুর ১:৩০ -এ মেমারীতে আমি পৌঁছানোর সাথে সাথেই দেখলাম ওরাও চলে এসেছে। একেবারে চলে গেলাম আশীর্বাদ বিরিয়ানিতে। তিনজনেই নিলাম চিকেন বিরিয়ানি।
আমাদের সবারই খুব খিদে পেয়েছিল। খাওয়া শেষ করে কিছুক্ষন গল্প করে রসুলপুর-শক্তিগড় হয়ে আমি বাড়ি চলে এলাম।
আজ গল্প এই পর্যন্তই। যারা আমার website-এ প্রথমবার গল্প পড়ছো, আমার এই গল্প টি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আমার বাকি গল্প গুলো পড়তে ভুলো না। আমার গল্প ভালো লেগে থাকলে নীচে দেওয়া Share link থেকে বন্ধুদের share করো। খুব তাড়াতাড়ি ফিরছি আবার এক travel story নিয়ে। Keep visiting my website...