18/11/2024 : Monday
Trip No.: - 5আজকের trip টা একটু অন্যরকম হবে, আজ বিশেষ কোনো জায়গায় ঘুরতে যাচ্ছি না, আজকের trip টা হলো একটা Food Trip. Headline দেখে আসা করি বুঝেই গেছো কি খেতে যাচ্ছি। তোমরা যারা আমার আগের Blog গুলো পড়েছো সবাই জানো যে আমি কতটা খেতে ভালোবাসি, তাই মাঝে মাঝে এরকম only food trip হবে। আমরা সবাই জানি কৃষ্ণনগর "সরপুরিয়া আর সরভাজা"-র জন্য বিখ্যাত। আজ সেটা নিয়েই এই blog.
৪ -৫ দিন আগে আমি আমার স্কুলে যখন Class-V-এর ক্লাস নিচ্ছিলাম, এই "কৃষ্ণনগর যে সরপুরিয়া আর সরভাজার জন্য বিখ্যাত" এই বিষয় টা নিয়েই আলোচনা করছিলাম। তখন হটাৎ করে আমার মাথায় এলো আমি তো নিজেই কখনো খাই নি তাহলে একদিন খেতে গেলে তো হয়। আমার Honda Dio 125 নিয়ে গত ৪ টে tour করে এখন তো ঘুরতে যাওয়া পুরো নেশার মতো হয়ে গেছে। সেদিন ই বাড়ি ফিরে "কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া আর সরভাজা" নিয়ে study করতে বসে গেলাম। সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে ঠিক করলাম এই ১৮ তারিখ সোমবার যাবো, সেই মতো শুক্রবার স্কুলে ছুটির application ও দিয়ে দিলাম।
আজ সকাল ৭ টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। বর্ধমান থেকে দেওয়ানদিঘি হয়ে নবদ্বীপ রোড ধরলাম। নবদ্বীপের এখানে গৌরাঙ্গ সেতু আগের মাসে শুনেছিলাম ভেঙে গেছে, কিন্তু গত পরশু দিন খবর পেলাম যে সরানো হয়ে গেছে, সুতরাং আর কোনো সমস্যা নেই। নবদ্বীপ এর ওখানেই রাস্তার ধারে একটা মিষ্টির দোকানে কচুরি আর ঘুগনি খেয়ে নিলাম। গৌরাঙ্গ সেতু দিয়ে নবদ্বীপ পেরিয়ে কৃষ্ণনগর এ যখন ঢুকলাম তখন ৯:২০ বাজছে। আমি এখন যাবো কৃষ্ণনগরের নেদিয়ারপারা মোড়ে।
ঘড়িতে এখন বাজছে ৯:৩০। আমি চলে এসেছি কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত মিষ্টি "সরপুরিয়া আর সরভাজা"-র সৃষ্টিকর্তা অধর চন্দ্র দাসের মিষ্টির দোকানে। দোকানের নাম - "অধর চন্দ্র দাস এন্ড সন্স", দোকানটি কৃষ্ণনগরের নেদিয়ারপাড়া মোড়ের কাছের। আর এই বিখ্যাত অধর বাবুর মিষ্টির দোকানই হল আবার কৃষ্ণনগরের প্রথম মিষ্টির দোকান।

এই আদি মিষ্টির দোকানের ইতিহাসটা তাহলে একটু বলে দিই।
আজ থেকে প্রায় ১২৫ বছর আগের কথা। শ্রী অধর চন্দ্র দাস দুটি নতুন ধরণের মিষ্টি তৈরি করেছিলেন - সরপুরিয়া এবং সরভাজা। প্রাথমিকভাবে তাঁর কোনও দোকান ছিল না। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে নিজেই সেগুলি বিক্রি করতেন। সুস্বাদু মিষ্টিগুলি শীঘ্রই জনপ্রিয়তা লাভ করে। তারপর তিনি ১৯০২ সালে নেদিয়ারপাড়ায় এই দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে আমি এখন দাঁড়িয়ে আছি।
এরপরে অধর চন্দ্র দাসের জ্যেষ্ঠ পুত্র শ্রী জগবন্ধু দাস (১৯২১-১৯৮৫) এই ঐতিহ্য অব্যাহত রাখেন। তিনি খিরপুলি, নিখুটি, শ্রীমোতি (রাকাম বরফি), রস কদম্ব মতো বিভিন্ন নতুন বিদেশী মিষ্টি তৈরি শুরু করেন। শীঘ্রই এই মিষ্টির জনপ্রিয়তা স্থানীয় প্রদেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
আমি দোকানে ঢুকেই প্রথমেই ২ টি করে সরপুরিয়া র ২ টি গরম গরম সরভাজা খেলাম। এককথায় just অমৃত। খুবই সুন্দর খেতে। গরম সরভাজা থেকে কি সুন্দর ঘিয়ের মতো গন্ধ বেরোচ্ছে।
দেখলাম দোকানের ভিতরে প্রচুর সরপুরিয়া আর সরভাজা তৈরী হচ্ছে। দোকানের ভিতর টা বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। মিষ্টি বেকিংয়ের কয়েকটি আধুনিক যন্ত্রও দেখলাম।
এরপর বাড়ির জন্য, মামার বাড়ির জন্য, স্কুলে আমার সহকর্মীদের জন্য সরপুরিয়া, সরভাজা, আর ওই দোকানের আর একটি বিশেষ মিষ্টি - ক্ষীরের সিঙ্গারা কিনলাম। Payment করতে গিয়ে আবার এক সমস্যা।ওনারা online payment accept করেন না। আমার কাছে cash খুব বেশি ছিলনা। আবার নেদিয়ারপাড়া মোড়েই ATM থেকে টাকা তুলে এনে payment করে দোকান থেকে বের হলাম।
বাড়ি এসে সবাইকে খাওয়ালাম। সবারই খুব ই ভালো লাগলো। আমার সরভাজা, সরপুরিয়া দুটোই খুব ভালো লেগেছে আর খিরের সিঙ্গারা টাও বেশ সুন্দর। তবে সরভাজা টা সরপুরিয়ার থেকে বেশি ভালো লাগলো। সবই ঠিক আছে, কিন্তু এতো বড় একটা দোকান অথচ online payment accept করে না এটা খারাপ লাগল। আর দোকানটি রাস্তার ধারেই, রাস্তা টি খুবই সংকীর্ণ, গাড়ি পার্কিংয়ের একটু সমস্যা।
যাইহোক তোমরা মনে মনে মিষ্টির স্বাদ অনুভব করো 🤣🧐, আবার কিছুদিনের মধ্যেই নতুন ব্লগ নিয়ে আসছি। ততক্ষন keep visiting 👍.