Special tour : প্রাচীন বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো ঘুরে দেখা

October, 2025

বাংলা ও বাঙালি এই দু’টি শব্দ যখন জোড়শব্দ হয়ে দাঁড়ায় তখন তার সাথে যুক্ত হয় বাঙালির প্রিয় উৎসব দুর্গাপুজো। শরৎকালে রামচন্দ্রের সূচনা করা এই পুজোকে আমরা ‘অকালবোধন’ রূপে চিহ্নিত করে থাকি। ষষ্ঠীতে আমন্ত্রণ ও অধিবাস পর্ব দিয়ে শুরু করে সপ্তমীতে নবপত্রিকা স্নান, অষ্টমীতে কুমারীপুজো, সন্ধিপুজো এবং নবমীতে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে দশমীতে সিঁদুর খেলার মধ্যে দিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জনের প্রথা আজও চলে আসছে। 

বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো বলতে মূলত পুরোনো জমিদার, রাজা এবং ধনী পরিবারগুলির দুর্গাপূজাকে বোঝায়, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি ও আড়ম্বর মেনে অনুষ্ঠিত হয়। দুর্গাপুজোর অভিজ্ঞতার সেরা জিনিসগুলির মধ্যে একটি হল বনেদি বাড়ি দুর্গাপূজায় যোগদান করা। শতাব্দী প্রাচীন বাঙালি জমিদার বা বাংলার ধনী পরিবারগুলি সমস্ত ঐতিহ্যবাহী আচার-অনুষ্ঠান বজায় রাখে, দুর্গাপূজা করার জন্য প্রাচীন রীতিনীতি পালন করা হয়।

আজ, শহরের দুর্গাপূজা একটি জমকালো অনুষ্ঠান যেখানে বিখ্যাত ক্লাব এবং প্রতিটি পাড়া থিম এবং কার্নিভাল প্রচারের জন্য একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে। সেরা থিম বা অনুষ্ঠান বা সাজসজ্জার জন্য পুরষ্কার এবং মিডিয়া কভারেজের ব্যবস্থা থাকে। এই সমস্ত কিছুর মাঝে, প্রতিটি বাঙালির আত্মায় গভীরভাবে রোপিত মা দুর্গা বনেদি বাড়িটিতে কিছুক্ষণ প্রশান্তি এবং নির্জনতার মুহূর্ত উপভোগ করেন। 

সাবেকিয়ানার গরিমায় এই সমস্ত বনেদি বাড়ির পুজোগুলি হয়ে উঠেছে প্রাচীন সভ্যতার এক একটি নিদর্শন। এই বাড়িগুলিতে লুকিয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস। আর সেই ইতিহাস খুঁজতে এবছর দুর্গাপুজোর সময় ঘুরে এলাম অনেকগুলি বনেদি বাড়ি থেকে যেগুলির গল্প এখন তোমাদের বলবো। তাহলে শুরু করা যাক। 

গত ২৯শে সেপ্টেম্বর ভোর ৪:৩০-এ বাড়ি থেকে বেরোলাম। বর্ধমান থেকে শক্তিগড় হয়ে প্রথমেই পৌঁছে গেলাম বড়শুল এবং তারপর মেমারী। বড়শুল এবং মেমারীর বিভিন্ন ক্লাবের থিম পূজা মণ্ডপ দেখার পর ফ্লাস্কে করে নিয়ে যাওয়া চা এবং বিস্কুট সহযোগে সামান্য টিফিন করে এগিয়ে চললাম বৈদ্যপুরের দিকে। 

মেমারী থেকে পৌঁছে গিয়েছিলাম বৈঁচি, তারপর সেখান থেকে বৈঁচি-কালনা রোড ধরে Google map দেখে বৈদ্যপুর গ্রামে প্রবেশ করলাম। 

বৈদ্যপুর গ্রামে প্রবেশ করে প্রথমেই গিয়েছিলাম নন্দী বাড়ি যা আমার আজকের গল্পের প্রথম বনেদি বাড়ি। নন্দী বাড়ি যখন পৌঁছালাম ঘড়িতে তখন সকাল ৭ টা। এই নন্দী বাড়ির ইতিহাসটা তাহলে একটু বলে দিই। 

নন্দী বাড়ি পৌঁছে দেখলাম পুজোর জন্য বেশ সাজানো গোছানো। দুর্গাদালানে দেখলাম সাবেকি দুর্গাপ্রতিমা। দুর্গাদালানে সপ্তমীর পূজা তখন শুরু হয়ে গেছে। বাড়ির অনেক সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সপ্তমীর সকালে এরকম এক জমিদার বাড়িতে পুজোর মন্ত্রোচ্চারণ, ঢাকের শব্দ, ধুপ-ধুনোর গন্ধে আকাশ বাতাস মুখোরিত হতে লাগল। আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক সৌন্দর্যের এই মিলনস্থল সেদিন সকালের ওই মুহূর্তে মনে এনেছিল অদ্ভুত এক প্রশান্তি। ঠাকুরদালানে পরিবারের সদস্যদের সাথে বসে পুজো দেখতে দেখতে কত তাড়াতাড়ি যেন সময় পেরিয়ে যেতে লাগলো। 

প্রায় ৩০মিনিট সময় কাটিয়ে নন্দী বাড়ি থেকে বেরোলাম আশেপাশের অন্যান্য ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো ঘুরে দেখতে। 

নন্দীবাড়ির পাশেই দেখলাম দুটি টেরাকোটা মন্দির। একটি আটচালা ও একটি নবরত্ন মন্দির। জয়দেব নন্দী তাঁর মায়ের স্মরণে নবরত্ন মন্দিরটি ১৬০২ সালে নির্মাণ করেছিলেন, আর আটচালা মন্দিরটি ১৮৫৩ সালে নির্মিত হয়েছিল। 

কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেলাম একটি পঞ্চরত্ন মন্দির এবং রাসমঞ্চ। পঞ্চরত্ন মন্দিরের পাশের রাস্তা দিয়ে গিয়ে দেখতে পেলাম কার্নিথিয়ান স্তম্ভযুক্ত নন্দী পরিবারের বৈঠকখানা এবং তার বিপরীতে নন্দী পরিবারের কাছারিবাড়ি। কাছারিবাড়ির ভিতরে একটি শিবমন্দির রয়েছে। সেদিন সকালে এই জায়গাটি একেবারে নির্জন ছিল। এখানে অনেকক্ষন সময় কাটানোর পর বেরোনোর সময় দেখলাম কাছারিবাড়ির ভিতরে এক জায়গায় ভোগের রান্নার আয়োজন চলছে। 

কিছুদূর এগিয়ে দেখতে পেলাম বিশাল বৃন্দাবনচন্দ্র মন্দির। এই বৃন্দাবনচন্দ্র নন্দী পরিবারের অন্যতম পারিবারিক দেবতা। ভিত্তিপ্রস্তর অনুসারে, এই মন্দিরটি ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ভাগীরথ, দুর্লভরাম এবং গঙ্গাদাস নন্দী দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এই তিন ব্যক্তি ছিলেন শিশুরাম নন্দীর পুত্র, যিনি নন্দী বংশের পিতৃপুরুষ হারাধন নন্দীর নাতি ছিলেন। 

বৃন্দাবনচন্দ্র মন্দির থেকে আর একটু এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেলাম বৈদ্যপুরের সবচেয়ে বিখ্যাত মন্দির হল দেউল রীতিতে নির্মিত জোড়া দেউল মন্দির, যা আনুমানিক ১৫৫০ সালে নির্মিত। এই চত্বরটি দ্বারা সংরক্ষিত। কাঠামোটি একটি রেখ দেউল , অর্থাৎ একটি অভ্যন্তরীণ গর্ভগৃহ সহ একটি একক মন্দির এবং এতে একটি জগমোহন বা সমাবেশ কক্ষ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ গর্ভগৃহটি ৩০ ফুট উঁচু এবং জগমোহনটি প্রায় ২০ ফুট।

দেউল মন্দিরের টেরাকোটার খোদাই মূলত ফুলের নকশা দ্বারা তৈরি। তবে, রাম ও রাবণের যুদ্ধের একটি প্যানেলও দেখা যায়। বিষ্ণুপুরের মন্দিরের চেয়েও পুরনো এই জোড়া দেউল মন্দির। 

বৈদ্যপুর ঘোরা শেষ করে আমি গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম পাশের গ্রাম মীরহাট। মীরহাটে রয়েছে দুটি পুজোবাড়ি - বড়ো পুজোবাড়ি এবং ছোট পুজোবাড়ি। আমি সেইদিন শুধুমাত্র বড়ো পুজোবাড়িতেই গিয়েছিলাম। 

মীরহাট বড়ো পুজোবাড়ির সামনে রয়েছে গাছপালায় ঘেরা ফাঁকা জায়গা। এই বাড়িতে যখন পৌঁছালাম তখন ঘড়িতে সময় সকাল ৮:৩০। এই বাড়ির ইতিহাসটা একটু সংক্ষেপে শুনে নাও। 

এই বড়ো পুজোবাড়িতেও আগের বৈদ্যপুরের নন্দীবাড়ির মতোই আমেজ। এখানেও দেখলাম সপ্তমীর পূজা তখনও চলছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত ঠাকুরদালানে পরিবারের সদস্যদের সাথে বসে পুজো দেখার পর বাইরে বেরিয়ে এলাম। সবথেকে ভালো লেগেছিল বাড়ির সামনে আমবাগান টা। 

সকাল ৯ টার পর মীরহাট থেকে বেরিয়ে বাড়ির উদ্যেশ্যে রওনা দিলাম। সেদিন ফেরার সময় শক্তিগড়ে Dosa Hut-এ Masala Dosa সহযোগে Breakfast করেছিলাম এবং সকাল ১১ টার মধ্যেই বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম। 

পর্ব - ২ : নবমীর সকাল

দশঘরা বিশ্বাস বাড়ি, চকদিঘি বাগানবাড়ি এবং শ্রীরামপুর রাজবাড়ি 

১লা অক্টোবর মহানবমীর সকালে আবার বেরিয়ে পড়েছিলাম কিছু বনেদি বাড়ির সন্ধানে। ভোর ৫টায় ঘর থেকে বেরিয়ে মশাগ্রাম হয়ে সকাল ৬টায় পৌঁছে যাই দশঘরা বিশ্বাস বাড়ি। শুরুতেই এই বিশ্বাসবাড়ি এবং তার পুজোর ইতিহাস একটু বলে দিই। 

আমি গোপীসাগর পুকুরের পাশে গাড়ি রেখে বাড়িতে যখন প্রবেশ করলাম নাটমন্দিরের সামনেই দেখতে পেলাম একটি হাড়িকাঠ। নাটমন্দিরের ছাদে ঝুলছে একটি বড়ো ঝাড়বাতি। দুর্গাদালানে প্রবেশ করে দেখলাম সেখানে নবমীর পূজা শুরু হয়ে গেছে। 

দুর্গাদালানে কিছুক্ষন বসে পুজো দেখার পর বাইরে বেরিয়ে বাড়ির পিছনদিকে গোপীনাথ মন্দিরে গেলাম। মন্দিরের সামনে রয়েছে নাটমন্দির। মূল মন্দিরটি টেরাকোটা প্যানেল দিয়ে সুসজ্জিত যেখানে রামায়ণ ও মহাভারতের দৃশ্যের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনের দৃশ্যগুলিও রয়েছে। মন্দিরে ত্রিখিলান যুক্ত প্রবেশদ্বার রয়েছে। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে পরিবারের প্রধান দেবতা, শ্রী শ্রী রাধা-গোপীনাথ জিউ-এর একটি মূর্তি যদিও মন্দির বন্ধ থাকার কারণে মূর্তি দর্শনের সুযোগ হয় নি। 

এরপর দশঘরা বিশ্বাসবাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম পাশেই চকদিঘি বাগানবাড়ি। আমি আমার ২৪ নং ট্যুরে চকদিঘি বাগানবাড়ি গিয়েছিলাম এবং তার গল্প তোমরা অনেকেই আমার ওয়েবসাইটে পড়েছো। এখানে পৌঁছে দেখলাম নবমী পূজা কিছুক্ষন আগেই শেষ হয়েছে। আগেরবার এসে যেরকম দেখেছিলাম এখন দেখলাম পুজোর জন্য চারপাশ বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। পরিবারের সকল সদস্য বাইরে থাকেন কিন্তু পুজোর সময় দেখলাম সকলেই এসেছেন। চকদিঘি বাগানবাড়ির ইতিহাস আগেই ২৪ নং ট্যুরে বলেছি এখন এই বাড়ির দুর্গাপুজোর ইতিহাসটা একটু বলে দিই। 

চকদিঘি বাগানবাড়িতে ফ্লাস্কে করে নিয়ে যাওয়া চা এবং বিস্কুট খেয়ে শরীরকে একটু সতেজ করে নিয়ে সকাল আট টায় চকদিঘি বাগানবাড়ি থেকে বেরিয়ে চললাম শ্রীরামপুর রাজবাড়ির দিকে। শ্রীরামপুর রাজবাড়ি পৌঁছাতে সকাল ৯:৩০ বেজে গেল। শ্রীরামপুর রাজবাড়ির ইতিহাস তাহলে জেনে নেওয়া যাক। 

বাড়িতে প্রবেশের সময় প্রথমেই চোখে পড়ল ইন্দোইউরোপীয় ধাঁচের সুদৃশ্য খিলানযুক্ত প্রবেশ তোরণ। পুজোর জন্য পুরো বাড়িটি সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দেখলাম বাড়ির একদিকে রান্নার আয়োজন চলছে। অনেকেই আসছে ঘুরে দেখতে। অনেককে দেখলাম বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে নিজেদেরকে ক্যামেরাবন্দি করতে। 

গোস্বামীবাড়ি থেকে যখন বেরোলাম তখন ঘড়িতে বাজে সকাল ১০:৩০। খুব খিদেও পেয়েছিল। শ্রীরামপুর থেকে চলে গেলাম দাদপুরে Highway Mirchi তে। Paneer Masala Dosa সহযোগে breakfast সেরে সেদিনের মত বাড়ি চলে এলাম। 

পর্ব - ৩ : দশমীর সকাল

বর্ধমানের খাজা আনোয়ার বেড়ে দাস জমিদারবাড়ি 

দশমীর দিন সকাল থেকেই আবহাওয়া খুব খারাপ ছিল। ভোর থেকেই প্রচুর বৃষ্টি। তাই সেদিন সকালে বেশি দূরে কোথাও যাওয়া হয়ে উঠলো না। বর্ধমানে আমার বাড়ির কাছেই এক বনেদি বাড়ি আছে। খাজা আনোয়ার বেড়ে দাসবাড়ি বা দাস জমিদারবাড়ি। সকাল ৮ টায় বৃষ্টি সামান্য একটু কমতেই গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম সেখানে। 

বাড়ির সামনেই বিশাল সদর দরজা। ভিতরে প্রবেশ করে দেখলাম দশমীর পুজো শুরু হয়ে গেছে। বাড়িটি প্রায় ভগ্নদশায় বিরাজমান, এক দিক ভেঙে আর কিছু নেই, শুধু জানালা গুলোই আছে, সিনেমার স্টুডিওর মতো।

বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের কাছ থেকে এই বাড়ির ইতিহাস যেটুকু জানতে পারলাম সেটাই বলছি। 

দাসবাড়িতে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে সেদিন সকালে বাড়ি চলে আসি কারণ আবহাওয়া খুবই খারাপ ছিল। 

পর্ব - ৪ : অন্তিম পর্ব : দশমীর সন্ধ্যা

শান্তিনিকেতনের সুরুল রাজবাড়ী  

সেদিন সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হয়। দুপুরের পর থেকে আর বৃষ্টি হয় নি। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে বিকাল চারটায় বাড়ি থেকে বেরোলাম। বর্ধমান থেকে গুসকরা হয়ে বিকাল সাড়ে পাঁচটায় পৌঁছে গেলাম শান্তিনিকেতনের সুরুল রাজবাড়ী। দুর্গাপূজার অন্তিম লগ্নে আমার এই বিশেষ ভ্রমণের অন্তিম বনেদি বাড়ি এই সুরুলের সরকার জমিদারবাড়ি তথা সুরুল রাজবাড়ী। 

আমার ৩ নং ভ্রমণকাহিনীতে এই সুরুল রাজবাড়ীর কথা বলেছিলাম তা তোমরা অনেকেই পড়েছো। এই বাড়ির পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে কিছু কথা বলে দিই। 

রাজবাড়িতে প্রবেশ করার সময় লক্ষ করলাম বাইরে মেলা বসেছে। গ্রামের মানুষজন আসছে পুজোর শেষমুহূর্ত উপভোগ করতে এবং মেলা ঘুরে দেখতে। রাজবাড়ীর চারিদিক আলো দিয়ে সাজানো। 

আলো ঝলমলে পরিবেশেও সেদিন পুজোর অন্তিম লগ্নে সকলেরই মন ভারাক্রান্ত, বিষন্নতায় মোড়া রাজবাড়ী প্রাঙ্গণ। আজ রাতেই প্রতিমা বিসর্জন, তারপর আবার এক বছরের অপেক্ষা। 

রাজবাড়ী তে কিছুক্ষন বসে তারপর বেরিয়ে পাশে সুরুল রাজবাড়ীর টেরাকোটা মন্দির দেখতে। এখানে রয়েছে ত্রিখিলানযুক্ত পঞ্চরত্ন লক্ষ্মী জনার্দন মন্দির এবং দুটি রেখা-দেউল শৈলীতে তৈরি শিবমন্দির। 

ভিত্তিপ্রস্তর থেকে বোঝা যায় যে এগুলি ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল। এই মন্দিরগুলির প্রতিষ্ঠাতা হলেন শ্রীনিবাস সরকার।

ঘড়িতে যখন সময় সন্ধ্যা ৬:৩০ সুরুল থেকে বেরিয়ে গেলাম বাড়ির উদ্যেশ্যে। বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় দেখলাম অনেক প্রতিমা বিসর্জনের জন্য শোভাযাত্রা বেরিয়েছে। বাড়ি ফেরার পথে একবার ঢুকেছিলাম ওরগ্রামে Hotel Khoai-তে। সেখানে চা ও পকোড়া খেয়ে তারপর রাত সাড়ে আটটার কিছু পরে বাড়ি ফিরেছিলাম। 

এই ছিল আমার এবছরের দুর্গাপুজোর সময় বনেদি বাড়ির পুজো নিয়ে বিশেষ ভ্রমণ কাহিনী। 

শহরের থিম পুজোর জাঁকজমক বাড়লেও গ্রাম বাংলার বহু বনেদি বাড়িতে আজও ঐতিহ্য মেনে দুর্গাপুজো পালন করা হয়। এই পুজোগুলি শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল। এগুলি ঘুরে দেখলে বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়। 

পরের বছর দুর্গাপুজোর সময় এরকম আরও অনেক বনেদি বাড়িতে ঘোরার ইচ্ছা নিয়ে শুরু হলো এক বছরের অপেক্ষা। 

আজ গল্প এই পর্যন্তই। যারা আমার website-এ প্রথমবার গল্প পড়ছো, আমার এই গল্প টি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আমার বাকি গল্প গুলো পড়তে ভুলো না। আমার গল্প ভালো লেগে থাকলে নীচে দেওয়া Share link থেকে বন্ধুদের share করো। খুব তাড়াতাড়ি ফিরছি আবার এক travel story নিয়ে। Keep visiting my website...

Share the Story

If you like my story share this post with your friends...